শেয়ার ব্যবসার খুঁটিনাটি


শেয়ার কি?

শেয়ার কি?


শেয়ার কি?




এক কথায় বলতে গেলে কোনো কোম্পানি মূলধন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তার উদ্দিষ্ট প্রাথমিক মূলধনকে কতোগুলো ছোট অংশে ভাগ করে জনগণের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়, এই প্রত্যেকটি অংশকে এক একটি শেয়ার বলে। 

কিভাবে শুরু করা যায় (How to Create Trading Account) 

প্রাপ্ত বয়স্ক মানে ১৮+ যে কেউ শেয়ার ব্যবসায় আসতে পারেন। তবে তার জন্য প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো ব্যাংকে সঞ্চয়ী (savings) হিসাব খুলতে হবে। এরপর সেই ব্যাংক হিসেবের বিপরীতে CDBL (সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অফ বাংলাদেশ লিমিটেডের) অধীনে বিও (বেনিফিসিয়ারি অনার) একাউন্ট খুলতে হবে। মানে সোজা বাংলায় আপনি যে কোনো ব্রোকার হাউসে থেকে এ বিও একাউন্ট খুলতে পারেন। এ বিও একাউন্ট খোলার পর একজন বিনিয়োগকারী প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি উভয় মার্কেটে শেয়ার ব্যবসা করতে পারেন।

প্রাইমারি শেয়ার (Primary Share)

বাজারে কোনো কম্পানি প্রথমে প্রাইমারি শেয়ারের মাধ্যমে প্রবেশ করে। অর্থাৎ নতুন কোনো কম্পানিকে বাজারে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে তাকে প্রথমে প্রাইমারি শেয়ার ছাড়তে হবে। শোনা যায় সবাই বলে প্রাইমারি শেয়ারে কোন লস নাই। সেকেন্ডারি শেয়ারে প্রচুর রিস্ক। এরকম কথা তারা কেন বলে আসুন জেনে নেই। প্রতিটি কম্পানির শেয়ারের একটা ফেস ভ্যালু থাকে। কম্পানি যখন তার শেয়ারটি মার্কেটে ছাড়তে চায় তখন সে ফেস ভ্যালুর সাথে প্রিমিয়াম যোগ করে একটি নির্দিষ্ট টাকায় শেয়ারটি অফার করে। এসইসি যদি অনুমোদন দেয় তবে তারা তাদের শেয়ার কেনার জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে। যাকে আমরা IPO/আইপিও বা ইনিশিয়াল পাবলিক অফার বা প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বলে থাকি।

সেকেন্ডারি শেয়ার (Secondary Share)
প্রাইমারি শেয়ার যখন কেউ বিক্রি করে দেয় তখন তা সেকেন্ডারি শেয়ারে পরিণত হয়। সেকেন্ডারি শেয়ার বাজারে ব্যবসা করতে হলে আপনার শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। অর্থাৎ, আপনাকে ব্যবসা করার জন্য ফান্ডামেন্টাল প্লাস টেকনিক্যাল এনালাইসিস সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। এ ধারণা অর্জন করতে পারলে শেয়ার ব্যবসায় আপনি ভালো লাভ করতে পারবেন। আর আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদে শেয়ারে ব্যবসা করেন এবং একে পেশা বা বাড়তি ইনকামের সোর্স হিসেবে ব্যবহার করতে চান তবে সেকেন্ডারি মার্কেট খুবই উত্তম জায়গা।


একাউন্ট খোলা


শেয়ার ব্যবসা শুরু করতে হলে:
  • প্রথমে বিও একাউন্ট খুলতে হয়।
  • ব্রোকারেজ হাউজে একক বা যৌথ একাউন্ট খোলা যায়।
  • বিও একাউন্ট খোলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো হল-
  • বয়স ১৮ বছর হতে হয়
  • নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে হয়
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • নিজের ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • নমিনির ১ কপি ছবি
  • ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট
  • জয়েন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রেও উপরোক্ত কাগজ ও ছবি জমা দিতে হবে।
  • বিও একাউন্ট খোলার জন্য ব্রোকারেজ হাউজভেদে ৫০০-২,০০০ টাকা চার্জ দিতে হয়।

ব্রোকারেজ হাউজ গুলোর মধ্যে কয়েকটির নাম ও ঠিকানা:
  • লংকা বাংলা সিকিউরিটিস লিমিটেড

এনএলআই টাওয়ার (১ম তলা), ৫৪ কাওরান বাজার, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, ঢাকা- ১২১৫
ফোন- ৯১০২৫৪৮


  • ব্রাক ইপিএল ষ্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড
প্রধান কার্যালয়, ডিএসই এনেক্স বিল্ডিং, ৯/ই মতিঝিল, ঢাকা- ১০০০
ফোন- ৯৫৬১০৭০, ৯৫৬৪৯৫৯, ৯৫৬১২৩২

  • রেপিড সিকিউরিটিজ
স্যুইট ৬২০ ও ৬২১, ডিএসই এনেক্স বিল্ডিং (৫ম তলা), ৯/ই মতিঝিল বা/এ, ঢাকা- ১০০০
ফোন- ০২-৯৫৫৪৭১২, ৯৫৬৩২৮১


  • শহিদুল্লাহ সিকিউরিটিজ লিমিটেড
প্রধান কার্যালয় ৯/এফ, রুম ৭১৩ (৬ষ্ঠ তলা), মতিঝিল বা/এ, ঢাকা- ১০০০
ফোন- ৭১৭৬০২০
মোবাইল- ০১৭৩০-০৩৪৮৭৮


  • এ.কে খাঁন এন্ড কোম্পানী লিমিটেড
উদয় টাওয়ার (৯ম তলা), গুলশান- ১, ঢাকা- ১২১২
ফোন- ৯৮৯২১৬৯, ৮৮৩৩৮৭২, ৯৫৬২৪৯২
মোবাইল- ০১৮১৯-২১০২১০
সদস্য নং- ০৬

  • এ.আর চৌধুরী এন্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড
রুম# ৩০৩ এবং ৩১৬
ডিএসই বিল্ডিং ৯/এফ, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা- ১০০০
ফোন- ৯৫৬১৪৮৭, ৯৫৫১০৪৪


শেয়ার কেনার নিয়ম


শেয়ার কেনার চেক লিস্ট 

১। P/E দেখুন। এটা অবশ্যই ১৬ বা তার নিচে হওয়া উচিত। যত কম তত ভাল
২। NAV দেখুন। এর সাথে বাজার মূল্যের একটা সামান্জস্ব থাকা উচিত। যার NAV ৩০০ টাকা তার বাজার মূল্য ৭০০ টাকার নিচে হওয়া উচিত।
৩। EPS দেখুন। এটা যত বেশি হবে ততই ভাল।
৪। মোট শেয়েরের সংখ্যা দেখুন। আর দেখুন তার কতটুকু পাবলিকের হাতে আছে। নিয়মিত গ্রহনযোগ্য মাত্রায় লেনদেন হয় এমন শেয়ারই কেনা উচিত।
৫। authorized capital আর Paid-Up Capita এর রেশিয়ো দেখুন। যদি ২ টা খুব কাছাকাছি হয় তবে ঐ কম্পানি কখনই কোন বোনাস শেয়ার দিবে না।
৬। গত ৩-৪ বছরের ট্রেক রেকর্ড দেখুন। কী পরিমান বোনাস দেয় তা দেখুন। বাৎসরিক গড় মূল্য দেখুন। চেষ্টা করুন এই মূল্যার কাছাকাছি দামে শেয়ার কিনতে।
৭। লাস্ট ৫-৬ মাসের খবর দেখুন (ডিএসই'র সাইটে প্রকাশিত)
৮। ডিএস ই এখন ৪ মাস পর পর কম্পানির আর্নিং রিপোর্ট দেয়। একটু মাথা খাটালেই বছর শেষে কি পরিমান লাভ করবে তা জানা সম্ভব।
৯। আর কম্পানির গুড উইল ও এর পরিচালকদের সামাজিক অবস্থান (রাজনৈতিক দইকটাও দেখবেন বিবেচনা করুন।


মনে রাখবেন বিক্রির সময় নয় বরং কেনার সময়ই আপনাকে লাভ করতে হবে । ব্যাক্তিগত ভাবে 'ডাউন মার্কেট' ই হল আমার প্রিয় বিনিয়োগের সময়

কি ভাবে কিনবেন ?

ধরুন আপনি শেয়াক ক এর ১০ টা লট কিনতে চান। সাধারনত আমরা এক বারেই ১০ টা লট কিনেফেলি আর এতে আমাদের লাভ বা লোকশানের ঝুকি অনেক অনেক বেরে যায়। বরং এক বারে ১০ লট না কিনে ৩-৪ বারে কিনুন - এই স্ট্রটেজিতে লাভের পরিমান কমে যাওয়ার (বুলিশ মার্কেটে) চান্স থাকলেও লসের পরিমান একদমই নেই। একে বলা হয় এভারেজিং টেকনিক।

বিক্রির ক্ষেত্রেও একই ফরমূলা সব একবারে বেচে না দিয়ে ২-৩ বারে বেচুন (বুলিশ মার্কেটে)।


কতটুকু কিনবেন ?

এটা নির্ভর করে আপনার পোর্টফলিও এর ডিজাইন ও তার বর্তমান অবস্থার উপর। সহজ কথায় এক কম্পানি ও এক সেক্টরের শেয়ার না কিনে ২-৩ সেক্টরের শেয়ার কেনা উচিত এবং প্রতি সেক্টরেরই ২-৪ টা কম্পানির শেয়ার আপনার পোর্টফলিওতে থাকা উচিত।




শেয়ারের টার্মস


একাউন্ট করার পর প্রথমেই শেয়ার বাজারের প্রচলিত টার্মসগুল শিখুন -Earning Per Share (EPS): earning of each share unit of a company.
Suppose company A's net earning (total earning -tax - operation cons ) is 100 TK and total number of share is 10. Thus the EPS= 100 TK/10 = 10 TK

শেয়ার প্রতি আয় - ধরুন কম্পানি ক এর নিট বাৎসরিক আয় ১০০ টাকা এবং মোট শেয়ারের পরিমান ১০ টি । সুতরাং শেয়ার প্রতি আয় হল ১০ টাকা । এটা যত বেশি হবে সেই শেয়ার তত বেশি লাভ দেবে।

Net Asset Value (NAV): Asset (such as matchings, buildings, land, deposit money ) value of each share. If company A has 100 share and its net total asset value is 10,000TK then NAV= 10,000TK/100 = 100TK

শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ - ধরুন কম্পানি ক এর নিট সম্পদ ১০০০ টাকা এবং মোট শেয়ারের পরিমান ১০ টি । সুতরাং শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ হল ১০০ টাকা । এটা যত বেশি হবে সেই শেয়ার তত ভাল এবং এর দাম ও বেশি হবে।

Price Earning Ratio (P/E): Ration of earning with price. Suppose company A's EPS is 20TK and its current price is 600TK thus P/E= 600TK / 20TK =30।

দাম ও আয়ের অনুপাত -ধরুন কম্পানি ক এর শেয়ার প্রতি আয় ১০ টাকা এবং মার্কেটে চলতি মূল্য ১৪০ টাকা । সুতরাং দাম ও আয়ের অনুপাত হল ১৪ । এটা যত বেশি হবে সেই শেয়ারে বিনিয়োগ করা তত খারাপ। সাধারনত এটা ১৬-২০ ক্রস করলে সেই শেয়ারকে ঝুকিপূর্ন ভাবা হয়। শেয়ার কেনার সময় এই অনুপান যত কম হয় ততই ভাল।

Face value : Inertial price of a share. - শেয়ারের প্রাথমিক মূল্য
Market value: Current price of a share. - চলতি বাজার মূল্য

The authorized capital of a company (sometimes referred to as the authorized share capital or the nominal capital) is the maximum amount of share capital that the company is authorized by its constitutional documents to issue to shareholders. Part of the authorized capital can (and frequently does) remain un-issued.

-- কোন কম্পানির সর্বোচ্চ সম্পদের পরিমান (আপার লিমিট)।

Paid-Up Capital: The total amount of shareholder capital that has been paid in full by shareholders.

-- শেয়ারের প্রাথমিক মূল্য অনুযায়ি সকল শেয়ারের মোট মূল্য

outstanding capital : The number of shares of capital stock that have been issued and that are in public hands. Outstanding stock excludes shares issued but subsequently repurchased by the issuer as Treasury stock. Outstanding stock is used in the calculation of book value per share and earnings per share. Also called shares outstanding, stock outstanding.

--> শেয়ারের প্রাথমিক মূল্য অনুযায়ি জনসাধারনের হাতে থাকা সকল শেয়ারের মোট মূল্য।



শেয়ার কেনার আগে


DSE তে শেয়ার কেটাগরি রয়েছে ৫ টি -

১। A - নিয়মিত AGM ও নূন্যমত ১০% লভ্যাংশ প্রদানকারী।
২। B- নিয়মিত AGM করলে ও ১০% এর কম লভ্যাংশ প্রদানকারী
৩। G- বাজারে অন্যর্ভূক্ত হলেও উৎপাদনে না যাওয়া কম্পানি।
৪। N- বাজারে অন্যর্ভূক্ত নতুন কম্পানি।
৫। Z- আনিয়মিত AGM ও ৬ মাস বা অধিক সময় ধরে উৎপাদন বন্ধ।

এ ছারা ব্যাবসার ধরন অনুযায়ি ২১ রকমের শেয়ার রয়েছে বাজারে -

ব্যাবসার ধরন - কম্পানি সংখ্যা
1 Bank 29
2 Cement 7
3 Ceramics Sector 4
4 Corporate Bond 2
5 Debenture 8
6 Engineering 22
7 Financial Institutions 21
8 Food & Allied 23
9 Fuel & Power 10
10 Insurance 44
11 IT Sector 5
12 Jute 3
13 Miscellaneous 11
14 Mutual Funds 24
15 Paper & Printing 2
16 Pharmaceuticals & Chemicals 20
17 Services & Real Estate 6
18 Tannery Industries 5
19 Telecommunication 1
20 Textile 27
21 Treasury Bond 164



এবার আসুন আমরা নিম্নক্ত শেয়ারটি কেনার ব্যাপারে স্বীদ্ধান্ত নেই -

কম্পানি : ক (যদিও এটি কোন কল্পিত কম্পানি নয় )

কেটাগরি: IT Sector - মাত্র ৫ টি কম্পানি রয়েছে এই কেটাগরিতে সুতরাং তা মেনুপুলেট করা তুলনামূলক সহজ

Last Trade 50.00
52 Week's Range 26.5 - 88.9 - দাম বেশ ফ্লাকচুয়েট করে
Face Value 10.0
Market Lot 500
Market Category A - ভাল
Electronic Share Y - ভাল
Total no. of Securities 22853600
Share Percentage: Sponsor/Director 52.24 Govt.0 Institute 0 Foreign 0 Public 47.76
Total no. of Securities 22853600
মানে প্রায় ১,০৯,৬৭, ৯২৮ (Total no. of Securities*Share Percentage) টি শেয়ার ও ২১,৯৩৯ টি লট (১,০৯,৬৭, ৯২৮/৫০০) রয়েছে সাধারন বিনিয়োগকারীর হাতে। অর্থাৎ বেশ ভাল ভাবেই একে মেনুপুলেট করা সম্ভব।

Authorized Capital in BDT* (mn) 300.0
Paid-up Capital in BDT* (mn) 229.0

দুট বেশ কাছাকাছি ফলে বোনাস শেয়ার পাবার সম্ভবনা কম আর পেলেও তার পরিমান বেশ কম হবে।

Last AGM Held: 24/12/2009
Bonus Issue 12%B 2009, 6% 2008, 10% 2007 - পূর্বের ইতিহাস ও তাই বলে ( বোনাস শেয়ার পাবার সম্ভবনা)
Right Issue n/a
Year End 200906 - আর এখন এপ্রিল মানে ২ মাস পরেই লভ্যাংশ ঘোষনা করবে। ফলে দামও বেশী হবে।
Current Price Earning Ratio (P/E)
(Based on Continuing operation) 52.19
Basic EPS in BDT* (Based on continuing operations) 0.24

শেয়ার প্রতি আয় মাত্র ০'২৪ ও P/E ৫২ ! যা কোন মানদন্ডই ২০ সর্বোচ্চ ২৫ এর বেশি হওয়া উচিত নয়। আর আমাদের টাকা যেহেতু কম সেহেতু অনেক বেশি লট কিনে বাজার নিয়ন্ত্রন করাও আমাদের মত ছোট বিনিয়োগকারীর পক্ষে সম্ভব নয়। সুতরাং এই শেয়ার না কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।






ডিভিডেন্ট হিসাব


ডিভিডেন্ট ডিক্লারেশন সব সময়ই শেয়ার বাজারের ঐ শেয়ারের দামের উপর গুরুত্বপূর্ন প্রভাব ফেলে যা খারাপ-ভাল দুই প্রকারেরই হতে পারে। ডিভিডেন্ট ডিক্লারেশন হল একটি কম্পানির স্টেটেজিকাল বিজনেস ডিসিশন ফলে আগে থেকে তা অনুমান করা বেশ দূঃস্বাদ্ধ কাজ (তবে আমাদের দেশে লিকআউটের ঘটনা প্রায়ই ঘটে )। তবে কম্পানির পরিচালনা পরিষদ যদি কোন বিশেষ সিচুয়েশন দ্বারা বায়াসড নায় হয় তবে আপনি বেশ সহজেই ঘোষিত হতে যাওয়া ডিভিডেন্ট সম্পর্কে আগাম ধারনা পেতে পারেন।

আসুন একটি উদাহরনের মাধ্যমে প্রকৃয়াটি দেখি -

Business Segment: Bank (ডিএসই তে লিস্টেড একটি ব্যাংক। নীতিগত কারনে নাম ডিসক্লোজ করতে না পাড়ার জন্য দুঃখিত)

Authorized Capital in BDT* (mn) 5000.0
Paid-up Capital in BDT* (mn) 3822.0

দুটর মধ্যে বেশ বড় ধরনের ব্যবধান করেছে। আবার বেসেল-২ বাধ্যবাদকতার জন্য ব্যাংকের মূলধন বৃদ্ধি প্রয়োজন। সুতরাং তাদের কেশের পরিবর্তে বোনাস শেয়ার ঘোষনা করার সম্ভবনা প্রবল।

Bonus Issue 30% 2008, 40% 2007, 75% 2006,200% 2005, 100% 2004,25% 2001

---পূর্ববর্তী বছরগুলতেই একই ধারা লক্ষ করা যায়।

সাল - EPS- ডিভিডেন্ট
2001 203.61 25%B
2002 199.11 -
2003 94.92 -
2004 67.35 100%B
2005 143.36 200%B
2006 70.46 75%B
2007 64.45 40%B
2008 51.54 30%B
2009 n/a ?

সাম্প্রতিক বছরগুলতে ঘোষিত ডিভিডেন্ট । যেহে্যু 2001 2002 ও 2003 এর ঘোষিত ডিভিডেন্ট আয়ের সাথে অসংগতিপূর্ন ফলে তা শোধরাতে 2004 2006 2007 এ অতিরিক্ত ডিভিডেন্ট দেয়া হয়েছে। তাই আমরা 2007 2008 এর ঘোষিত ডিভিডেন্টকে স্টেন্ডার্ড ধরে আমাদের কেলকুলেশন করব -


2007 এ EPS- ডিভিডেন্ট এর অনুপাত 0.62
2008 এ EPS- ডিভিডেন্ট এর অনুপাত 0.58

অতএব এভারেজ অনুপাত 0.60 কে আমরা বেজ ধরমাম 2009 এর জন্য

Basic EPS in BDT* 37.03 (Q3 -9 Month)

এখন প্রতিটি কম্পানি ৩ মাস পর পর তাদের আয়ের হিসার দেয় (যা হল সাম্ভাব্য হিসার ; একুরেট নয়) । ৯মাসের আয়কে (37.03) ১২ মাসে রিফলেক্ট করলে দাড়ায় 49.37।

সুতরাং এই কম্পানির সাম্ভাব্য ডিভিডেন্ট হবে (49.37 * 0.60 ) = 29.6%B


এবার আসুল দেখি আমাদের প্রেডিকশন কতটা সঠিক ছিল। 2009 সালের জন্য কম্পানিটি নিম্নক্ত ডিভিডেন্ট ঘোষনা করেছে

Basic EPS in BDT* (Q4 -12 Month) 54.74
Dividend : 30%B


দেখতেই পাচ্ছেন আমাদের প্রেডিকশন বেশ ভালই ছিল (নিজেকে ত এখন যতিশি যতিশি মনে হচ্ছে । রেজাল্ট দেখে আমি নিজেও একটু অবাক হয়েছি )। আর এর মূল কারন -

১। কম্পানি তার Dividend সংক্রান্ত সাধারন ফর্মূলা থেকে সরে আসেনি।
২। কম্পানির শেষ ৪ মাসের আয় পূর্ববর্তী মাসগুলর মতই সচল ছিল।
৩। কম্পানি আয় সংক্রান্ত অতিরন্জিত/ ভুল কোন সংবাদ পূর্বে প্রকাশ করেনি

** উপরে বর্নিত উপায়টি মূলত সাধারন কেলকুলেশনের উপর ভিত্তি করে রচিত। সব সময় তা ১০০% কারেক্ট হবে তার কোন নিশ্বয়তা নাই তবে অতিপ্রাকৃত কোন ঘটনা না ঘটলে এর একিউরিসি রেট ৮০-৯০%।



মার্কেট অ্যানালাইসিস


ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস (FA) ও টেকনিকাল এনালাইসিস (TA) শেয়ার মার্কেটে বিনীয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিত দুটি ডিসিশন সাপোর্ট টুল।

ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস (FA): মূলত কম্পানির ফিনানসিয়াল ফান্ডামেন্টাল তথা লাভ-লোকশান/আয়-ব্যায়কে কেন্দ্র করেই এ ধরনের এনা লাইসিস করা হয়। আমার ব্লগে শেয়ার বাজার সম্পর্কিত সব লেখাই এ ধরনের এনালাইসিসের ভিত্তিতে লেখা। তাই পাঠেক মাত্রই জানেন কি ভাবে এই টেকনিক কাজ করে।

টেকনিকাল এনালাইসিস (TA): এটি একটি স্টেটিস্টিকাল টেকনিক যা মূলত বাজারে শেয়ারের মূল্য ও চাহিদার আনুপাতিক হার দ্বারা নিয়ন্ত্রীত। নিশ্চই অবাক হচ্ছেন কী সহজেই না গ্রাফ/চার্ট দেখে শেয়ার কেনা-বেচা করা যায়। সংক্ষেপে বললে সিসটেমটা এমন " ৫-৬/১০-১৫ দিনের এভারেজ মূল্য ও ট্রেড ভলিউমের চাইতে এখন কার মূল্য ও ভলিউম বেশী হলেই বাই আর তা কমতে শুরু করলেই সেল। "

টেকনিকটা যে কার্যকরী এ ব্যাপারে কোন সন্ধেহ নেই কিন্তু সমস্যা হল এর ব্যাবহারকারী। ছবি ত সবাই তুলতে পারে কিন্তু আমার আর একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারের হাতে একই কেমেরা থাকলেও ছবির মান যে আকাশ-পাতাল হবে তা বলাই বাহুল্য।

প্রথকেই কিছু প্রশ্ন করি, TA যারা বুঝেছেন তাদের জন্য

১। বর্তমান মূল্য ও ট্টেডিং ভলিউম গড় মূল্য ও গড় ট্টেডিং ভলিউমের চেয়ে বেশী হলেই শেয়ার কিনতে হবে। কেন এই বৃদ্ধি তা কি কেউ ভেবেছেন ?

২। ঠিক কতটুকু বেশী হলে/ কমলে আপনি ক্রয়-বিক্রয় শুরু করবেন ?


১ এর জবাবে অনেকেই বলবেন, দাম ও ক্রয়-বিক্রয় বৃদির পেছনের কারন চাহীদা বৃদ্ধি । তাদের জন্য সম্পূরক প্রশ্ন এই চাহিদা কে সৃষ্টি করল গেম্বাররা না কি কম্পানির আর্থিক ভিত্তি ?
২ এর জবাবে অনেকে হয়ত বলবেন, ১০-১৫% বৃদ্ধি পেলেই কিনতে হবে আবার ১০-১৫% কমে গেলে বিক্রি।

এবার আসুন একটা উদাহরন দেখি -

কম্পানি : ক (কোন কল্পিত কম্পানি নয়, নীতিমালার কারনে নাম ডিসক্লোজ করা গেল না )
কেটাগরি: IT Sector - মাত্র ৫ টি কম্পানি রয়েছে এই কেটাগরিতে সুতরাং তা মেনুপুলেট করা তুলনামূলক সহজ

Last Trade 50.00
52 Week's Range 26.5 - 88.9 - দাম বেশ ফ্লাকচুয়েট করে
Face Value 10.0
Market Lot 500
Market Category A - ভাল
Electronic Share Y - ভাল
Total no. of Securities 22853600
Share Percentage: Sponsor/Director 52.24 Govt.0 Institute 0 Foreign 0 Public 47.76
Total no. of Securities 22853600
মানে প্রায় ১,০৯,৬৭, ৯২৮ (Total no. of Securities*Share Percentage) টি শেয়ার ও ২১,৯৩৯ টি লট (১,০৯,৬৭, ৯২৮/৫০০) রয়েছে সাধারন বিনিয়োগকারীর হাতে। অর্থাৎ বেশ ভাল ভাবেই একে মেনুপুলেট করা সম্ভব।

এখন যদি কোন গ্রুপ সেই ২১,৯৩৯ টি লটের ২০% কম দামে কিনে এবং আরো ৫-৭% লট গড় মূল্যের চাইতে বেশী দামে কেনা শুরু করে (ধরুন ৫-২০ ট্রেডিং ডে এর মধ্যে কিনবে) তা হলে কিন্তু আমাদের এই টেকনিকাল এনালাইসিস (TA) ঠিকই বাই সিগনাল জেনারেট করবে। যদিও এই চাহিদা বৃদ্ধি মেনুপুলেটেড । দু:খজনক হলেও সত্য যে MACD গ্রাফ, Candle stick গ্রাফের সাধ্য নেই এই ম্যানুপুলেশনকে ইনডিকেট করার । তাই গ্রাফ দেখে আপনি যখন কিনতে শুরু করবেন, ঐ গ্রুপ তখন কেনা থামিয়ে দিয়ে হাতে থাকা ২০% লটগুল বিক্রি শুরু করবে আপনার কাছে।

আর যেহেতু গড় মূল্যের ১০-১৫% বেশি দামে আপনি শেয়ার কিনছেন সেহেতু আপনি বড় রিস্ক নিচ্ছেন কারন এই দাম কম্পানির আর্থিক ভিত্তি দ্বারা সাপোর্টেড নয়। ফলে শেষ দিকের বিনিয়োগকারীরা মিনিমাম ২০-২৫% ক্ষতির স্বীকার হবেন।


তাই টেকনিকাল এনালাইসিস (TA) ফলো করার আগে জাচাই করুন এই চাহীদা বৃদ্ধির কারন। যদি এটা কম্পানির আর্থিক লাভের পরিমান দ্বারা ট্রিগার্ড না হয়ে থাকে তবে শত হাত দূরে থাকুন ঐ শেয়ার থেকে (TA যতই বাই সিগনাল জেনারেট করুক না কেন )


আমার ব্যাক্তিগত মতামত হল টেকনিকাল এনালাইসিস ব্যাবহার করুন আপনার বিনীয়োগের সময়কাল কমিয়ে আনতে তবে অবশ্যই দেখুন এই চাহীদা বৃদ্ধি যেন কম্পানির আর্থিক ভিত্তি দ্বারা সাপোর্টেড হয়। তাহলে সেলিং সিগনাল মিস করলেও দুশ্চিন্তা নেই কারন আর্থিক ভিত্তি আপনাকে সুরক্ষা দেবে। আর কম্পানির আর্থিক ভিত্তি নিরুপনের জন্য ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস (FA) হল সব চেয়ে গ্রহনযোগ্য উপায়।

নতুন বিনিয়োগকারীদের প্রতি অনুরোধ, অন্ধ হয়ে TA এর পেছনে ছুটবেন না, আগে অ-আ শিখুন পড়ে ক-খ নইলে অল্প বিদ্যা ভায়ঙ্করী হবার সমুহ সম্ভাবনা আছে। আর যারা টেকনিকাল এনালাইসিস শেখাচ্ছেন, তাদের প্রতি অনুরোধ ভাল দিকগুলর পাশাপাশি এর খারাপ দিকগুল ও বলুন। নতুন দেরকে সচেতন করুন অন্ধ অনুকরন করতে শিখিয়েন না। কি এবং কোন কারনে বাইং সিগনাল জেনারেট হল এবং কে আপনি তা ফোলো করছেন তাও বলুন।




ট্রেইলিং স্টপ


যারা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছেন তাদের অনেকেই ঠিক বুঝতে পারেন না যে কত দামে তার হাতে থাকা শেয়ারটি বিক্রি করবেন। তাই আমি শেয়ার কেনার সময়ই একটা টার্গেট ঠিক করে তার অপেক্ষায় থাকতাম। অভিষ্ট দাম পেলেই বিক্রি ! ফলে শেয়ার হাত ছাড়া করার পরই দাম অনেক বেড়ে যাবার ঘটনা ঘটেছে বেশ কবার। এমন অবস্থায় আফসোসে হাত কামড়ানো ছাড়া কোন উপায় নাই - দাম বাই জোনের বাইরে কিনে ধরা খাবার সম্ভবনা আছে আবার দাম ও ধীরে ধীরে বাড়ছে অর্থাৎ চেয়ে দেখা ছাড়া কোন উপায় নাই।

এই অবস্থা থেকে বাচার একটি ৯০ ভাগ সফল উপায় হল ট্রেইলিং স্টপ সেল অর্ডার (Trailing Stop Sale Order)। ধরুন ১০০ টাকায় কেনা একটি শেয়ারে আপনার সেল টার্গেট হল ১৩০। সে অনুযাই বিক্রির পড় দাম সর্বোচ্চ ১৭০ টাকায় উঠল। ফলে আপনি অতিরিক্ত ৪০ টাকা লাভ থেকে বন্চিত হলেন, ভাবুন যদি আপনি শেয়ারটি ১৫৩ বা ১৬২ টাকায় বিক্রি করতে পারতেন ! শুধু মাত্র জতিশী ও অতিভাগ্যবানদের পক্ষেই শেরারটি ১৭০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। তাই আমরা ১৩০ এর চাইতে ১৫৩/১৬২ পেলেই আল্লহকে ধন্যবাদ জানানো উচিত।

এখন আমি আপনাদের এই উপায় যা আমাদের ১৫৩/১৬২ পেতে সাহায্য করবে তার বিবরণ দিচ্ছি। ট্রেইলিং স্টপ - নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে আমাদের শেয়ার মূল্য কে ট্রেইল বা অনুসরন করতে হবে, যা আমরা সবাই করি কিন্তু ঠিক উপায়ে করি না। অস্ভাবিক অবস্থা না হলে কোন শেয়ারের দামই টানা বাড়ে না। ২-৪ দিন বাড়ে ১-২ দিম কমে আবার বাড়ে, অর্থাত উঠা-নামার মধ্যে উঠার গতি বেশি বলেই দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে।

এবার আমাদের উদাহরনটিতে ফিরিয়ে আনি, ১০০ টাকার শেয়ারটি যখন ১২০ টাকায় পৌছে তখনই আমাদের টেনশন শুরু কারন সেল টার্গেট আর ১০ টাকা দূরে। এই অবস্থায় আপনি ১০% ট্রেইলিং স্টপ প্রয়োগ করুন। ফলে আপনার নতুন সেল টারগেট হল 120X0.9=108। ১০৮ টাকা হলে আপনি বিক্রি করে দিবেন। দাম কমে ১২০ থেকে ১১৫ হল। শে্যারটির দাম ১৩০ টাকা হবার কোন নিশ্বয়তা কিন্তু নাই , হতে পারে ১২০ টাকাই এ বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ মূল্য। এ ক্ষেত্রে আপনি ১০৮ টাকায় শেয়ারটি সেল করে লাভ সহ বেরুতে পারবেন না হলে ১৩০ টাকার আশায় লোকশানে পড়বেন বা কেনা দামে ছেড়ে আসবেন। কিন্তু যদি শেয়ারটি ১১৫ টাকা থেকে ১২৫ টাকায় আসে তখন আপনি আরেকটি সেল টারগেট পাবেন 125X0.9=113। এভাবে ১৩০ এ ১১৭, ১৪০ এ ১২৬ টাকা আপনার সেট টারগেট হল। যেহেতু দাম এখন ১৪০ মানে আপনার টার্গেটের চাইতে ১০ টাকা বেশি সেহেতু আপনি আরো আক্রমনাত্বক হলেন ট্রেইল পারসেন্টেজ ১০ থেকে ৫ এ নিয়ে আসলেন। ফলে ১৪০ এ 140X0.95=133 , ১৬০ এ ১৫২ আর ১৭০ এ ১৬২। আর যার আক্রমনাত্ব না হয়ে ১০% স্হির ছিলেন তারা ১৫৩ টাকা সেল টারগেট ঠিক করবেন। শেয়ারের দাম ১৭০ থেকে এবার পড়তে শুরু করল ১ দিন বাড়ে ৩ দিন পরে এই অবস্থায় দাম ১৬২ বা ১৫৩ তে আসলেই সেল করুন। ১৩০ এর চাইতে কি ১৫৩ বা ১৬২ অনেক বেশি আকর্ষনীয় নয় ? ইউটিউবে সার্চ করলেই এই টেকনিকের অনেক সুবিধা-অসুবিধা পেয়ে যাবেন। তখন ১০% ও ৫% ট্রেইলিং স্টপ সেট করার মাজেজা আরো ভাল বুঝবেন। তবে বিশেষগ্ঙরা কিন্তু ৮% ই স্হীর থাকতে উৎসাহীত করেন।




মুভিং এভারেজ


মুভিং এভারেজ (MA) : এর ভাল বাংলা কি হবে তা নিয়ে আমি বেশ সদ্ধিহান তার পরেও সাহস করে এর একটা বাংলা নাম দিলাম 'চলমান গড়' (বাংলা সাহিত্য অনুরাগী বা বাংলা একাডেমির পাবলিকরা আমেরে নিশ্চিত দৌড়ানি দেবে এমন কু-কর্মের জন্য :) )। তা এই চলমান গড় কি জিনিস তার ডেফিনেশন না দিয়ে বরং একটা উদাহরন দেই তা হলে হয়ত সবাই ভাল ভাবে বুঝতে পারবেন-

ধরুন শেয়ার 'ক' এর গত ৬ দিনের মূল্য হলো - ৫০, ৫২, ৫৫, ৫৩, ৫৪, ৫৫ টাকা ।

তা হলে ২ দিনের চলমান গড় - ৫১, ৫৩'৫, ৫৪, ৫৩'৫, ৫৪'৫

এবং ৪ দিনের চলমান গড় - ৫২'৫, ৫৩'৫, ৫৪'২৫।

অনেক ধরনের মুভিং এভারেক রয়েছে, যেমন - simple moving average (SMA), Cumulative moving average, Weighted moving average, Exponential moving average(EMA)।

এর মধ্যে আমাদের কাজে লাগবে Exponential moving average(EMA) যা exponentially weighted moving average (EWMA) নামেও পরিচিত। এর ইংরেজী নাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে কি ভাবে তা কেলকুলেট করা হয় :) ।

পদ্ধতিটা হল গড় নির্নয়ের সময় প্রতিটি সংখ্যাকে এক্সপিনেনসিয়ালি কমতে থাকা একটি সংখ্যা (ভর) দিয়ে গুন করে যোগ করা হয়। সাম্প্রতিক ডাটায় ভর বেশি ও পুরন ডাটায় ভর কম। যারা আরো বিস্তারিত জানতে চান তারা উইকি থেকে ঘুরে আসতে পারেন http://en.wikipedia.org/wiki/Moving_average







মিউচুয়াল ফান্ড


ধরুন আপনার বন্ধু করিম অনেক দিন ধরেই শেয়ার বাজারে আছে। ছোট বড় ঠেলা-ধাক্কা খেয়ে স্বশিক্ষিত হইছে :) মানে ব্যবসাটা বেশ ভালই বোঝে আর কি । তাই নতুন বিনিয়োগকারী বন্ধুরা মিল্লা ঠিক করলেন একা একা ধরা না খাইয়া সবার পুজি করিমরে দিলেন ব্যাবসার জন্য যাতে সে নিজের বুদ্ধি খাটিইয়া ভাল ব্যবসা করবার পারে।

মানে বলতে পারেন এক ধরনের সমবায় সংঘ যার পরিচালনার ভার পরেছে আপনার ঐ বন্ধুর কাধে। ঠিক এই কাজটিই করে মিচুয়াল ফান্ড ম্যানেজার, ফান্ডের ই্উনিট হোল্ডারদের টাকা বিনিয়োগ করা হয় শেয়ার বাজারে এবং এই বিনিয়োগের লাভ-লোকশানের অংশিদার হল ফান্ডের ই্উনিট হোল্ডারগন। সুতরাং মিচুয়াল ফান্ড কোন কম্পানি শেয়ার নয় এবং তার আয়-রোজগার সম্পূর্ন নির্ভরকরে শেয়ার বাজারের খারাপ-ভাল অবস্থার উপর।

ধরুন মিচুয়াল ফান্ড ক এর মোট মূলধন ১০,০০০ টাকা এবং ইউনিট সংখ্যা ১০০ অর্থাৎ ফেস ভ্যালু ১০ টাকা। এই টাকায় শেয়ার ১,২,৩ কেনা হয়েছিল শুরুতে যার বর্তমান বাজার মূল্য ১২,৫০০ টাকা। মানে মিচুয়াল ফান্ডের বেসিক NAV ১০ টাকা এবং চলতি NAV ১২'৫ টাকা। ধরুন বছর শেষেও একই অবস্থা অতএব প্রতি ইউনিটে আয় ২'৫ টাকা যার ১ টাকা বোনাস দেয়া হল এবং বাকি ১'৫ আগের ১০ টাকার সাথে যোগ করে পুনরায় বিনিয়োগ করা হলো। এই ভাবে ৩-৪ বছর পর দেখা গেল ঐ মিচুয়াল ফান্ডের বেসিক NAV ১৪ টাকা এবং চলতি NAV ১৭'৫ টাকায় দাড়িয়েছে। এখন প্রশ্ন হল আপনি এই মিচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কিনতে গেলে কত টাকায় কিনবেন ?

আইডিয়াল সিচুয়েশনে ১৪ টাকা এবং রিয়েল সিচুয়েশনে ১৭'৫ টাকা বড় জোর ১৮-২০ টাকা। কিন্তু আমাদের বাজারে এই শেয়ার বিক্রি হয় ৩০-৫০ টাকায়। পৃথিবীর সব মার্কটে মিচুয়াল ফান্ড ইউনিটের দাম তার চলতি NAV এর ধারে কাছে হয়।




শেয়ারের পতন রোধ


টেকনিক-১ :
এভারেজিং :

এর আগে পোর্টফলিও ডিজাইনের পেজে বলেছিলাম যে পোর্টফলিও ছোট হলে (৩ লাখের কম) ১০% আর বড় হলে ১৫% টাকা কেশ হিসাবে বিও একাউন্টে রাখবেন । যখন দেখবেন যে আপনার শেয়ারের দাম কমছে তখন চোখ রাখুন, লস ১০% টপকালেই লাল বাত্তি মানে আপনাকে কিছু একটা করতে হবে। যদি আপনি এভারেজিং করতে চান তবে কেশ টাকা থেকে একই শেয়ার আবার কিনুন যাতে গড় দাম কমে আসে। একবারে না কিনে ছোট ছোট লট আকারে কিনুন। একটা ব্যপার লক্ষ করবে যে ডাউন মার্কেটেও ২-১ দিনের জন্য আপনার শেয়ারের দাম বেশ বারছে-কমছে, ঠিক তখন ঐ দিনের দাম যদি আপনার আগে কেনা কোন লটের দামের চেয়ে ৫% বা তার বেশি হয় তবে বেচে দিন, দাম আগের স্থানে এলে আবার কিনুন। এভাবে এভারেজিং করে করে বেশী দামে কেনা শেয়ারের দাম কমিয়ে আনা যায়।

টেকনিক-২
নেটিং:


ধরুন আপনার কোন কেশ নাই (খুবই খারাপ কথা X( পাবলিকরে শেখাইলেও শেখে না :) ) তখন আপনাকে করতে হবে নেটিং । বেশী উঠা-নামা করে এমন শেয়ারের জন্য আদর্শ টেকনিক। ধরুন সকালে যার দাম ১০ টাকা অনেক সময় বিকালেই তা ১৫ টাকায় চলে আসে আবার সলালে যা ৩০ টাকা দিন শেষে তা ২০ টাকায় নামে । এমন হলে একই দিনে কম দামে ২-৩ লট কিনুন এবং বেশী দামে হাতে থাকা ২-১ লট বেচুন। কেনা-বেচা করে গড় দাম কমিয়ে আনুন।

শেষের উপায় টা কোন টেকনিকের পর্যায়ে পড়ে না এবং এটা বেশ রিস্কি। যখন দেখবেন আপনার লস ১৫% ক্রস করেছে তখন তা দ্রুত বেচুন এবং কমদামে তুলনামূলকা ভাল ও নিশচিত লাভ হবে এমন শেয়ার (ব্যাংক এ ক্ষেত্রে আদর্শ) কিনে মার্কেট আপওয়ার্ড হবার জন্য অপেক্ষা করুন যাতে আপনি ১৫% লস কাটিয়েও লাভের মুখ দেখতে পারবেন।




শেয়ার বাইব্যাক


শেয়ার বাইব্যাক (share buyback) হচ্ছে ইস্যুয়ার কোম্পানি কর্তৃক বাজার থেকে নিজ কোম্পানির শেয়ার কিনে নেওয়া। পৃথিবীর অনেক দেশেই শেয়ার বাইব্যাক করার বিধান রয়েছে।

নানা কারণে একটি কোম্পানি বাজার থেকে ইস্যুকৃত শেয়ারের একাংশ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। কোন কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূল্য একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নেমে গেলে কোম্পানিটি আগ্রহী শেয়ারহোল্ডার বা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে সে শেয়ার কিনে নিতে পারে; যাতে বাজারে শেয়ারটির যোগান কমে যায়। এতে শেয়ারের দাম আবার বেড়ে যাবার সম্ভাবনা তৈরি হয়।

এছাড়া কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ ও সম্ভাবনা কমে এলেও এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে কর্তৃপক্ষ।এমন ক্ষেত্রে কোম্পানি বাজার থেকে শেয়ার তুলে নিয়ে তার পরিশোধিত মূলধন কমিয়ে ফেলে। এভাবে মূলধন ও শেয়ার সংখ্যা কমে এলে মুনাফার প্রবৃদ্ধি না হওয়া সত্ত্বেও শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস বেড়ে যায়।তাতে কোম্পানির লভ্যাংশ দেওয়ার সামর্থ্যও বাড়ে।

পৃথিবীতে শেয়ার বাইব্যাক করার মত ঘটনা অহরহই ঘটছে। গত বছরের মাঝামাঝি বিশ্বের অন্যতম বড় চেইন স্টোর ওয়ালমার্ট বাজার থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার শেয়ার তুলে নেয় তথা বাইব্যাক করে। চলতি ২০১৩ সালের গোড়ার দিকে অ্যাপল ইনকরপোরেশন ১৪ বিলিয়ান ডলার মূল্যে তার ২ কোটি ৫৬ লাখ শেয়ার বাইব্যাক করে।

শেয়ার বাইব্যাকের ব্যবস্থা বাংলাদেশে প্রচলিত নয়।কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এ শেয়ার বাইব্যাক করার কোনো সুযোগ নেই।২০১০ সালে পুঁজিবাজারে বড় ধসের পর বেশ কয়েকটি কোম্পানি মূল্য পতন ঠেকাতে বাজার থেকে শেয়ার কিনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। কিন্তু কোম্পানি আইনে এর কোনো বিধান না থাকায় তারা তা পারেনি।

তবে কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর প্রস্তাবিত সংশোধনীতে শেয়ার বাইব্যাক করার সুযোগ রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। 




জিরো কুপন বন্ড


জিরো কুপন বন্ড বা বন্ড : এটা অনেকটা সরকারী সন্চয় পত্রের মত পার্থক্য হল এর কিছু অংশ মেয়াদ শেষে শেয়ারে কনভার্ট হয়। ধরুন কম্পানি খ ৫ বছর মেয়াদি ১,৫০০ টাকার বন্ড ছাড়ল যা ১০০০ টাকায় বিক্রি হবে এবং এর ১০% শেয়ারে কনভার্ট করা হবে। এখন আপনি এই বন্ড ১০০ টা কিনলেন।

বিনিয়োগ: ১০০০*১০০ =১,০০,০০০ টাকা

এখন ৫ বছর পর আপনি পাবেন -

১৫০০*৯০ =১,৩৫,০০০ টাকা এবং ঐ কম্পানির ১০ টি শেয়ার।

প্রসংগত এই ৫ বছরে কম্পানি আপনাকে কোন লভ্যাংশ দেবে না। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এটা সাধারন শেয়রের মত নয়। মূলত ধীর্ঘস্থায়ী বিনিয়োগের জন্যই বন্ড কেনা উচিত।

এই বন্ড ও মিচুয়াল ফান্ড মূলত সবচেয়ে সেফ বিনিয়োগ হিসেবে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় এবং এগুলোর দাম খুব বেশি ওঠা-নামা করে না অর্থাৎ তা বাজার স্থিতিশীল রাখতে কাজ করে । অথচ আমাদের দেশে বিনিয়োগকারীদের অগ্যতার সুযোগ নিয়ে বেশি দামে এগুল তাদেরকে গছিয়ে দেয়া হয় যা বাজারকে স্থিতিশীল করার পরিবর্তে আরো অস্থিতিশীল করে। সুতরাং বন্ড ও মিচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার আগে ভাল ভাবে যাচাই-বাছাই করে স্বীদ্ধান্ত নিন।

বাজার চিত্র : আপনাদের বোঝার জন্য ২ টা উদাহরন দিলাম

DBH1STMF On the close of operation on March 25, 2010, the Fund has reported Net Asset Value (NAV) of Tk. 10.36 per unit on the basis of current market price and Tk. 10.35 per unit on the basis of cost price against face value of Tk. 10.00

-ফেব্রুয়ারী ২০১০ যাত্রা শুরু করে এই কম্পানির বর্তমান নিট মূল্য ১০'৩৫ টাকা (অর্থাত ইউনিট প্রতি আয় ০'৩৫ টাকা)। আর এই ১০'৩৫ টাকায় কেনা শেয়ার সমূহের বর্তমান বাজার মূল্য ১০'৩৬ টাকা। মানে তাদের পোর্টফলিও লাভে পরিচালিত হচ্ছে এবং এর পরিমান ০'১% (বেজ ১০'৩৫)।

GRAMEEN1 On the close of operation on March 25, 2010, the Fund has reported Net Asset Value (NAV) of Tk. 54.98 per unit at current market price basis and Tk. 27.80 per unit at cost price basis against face value of Tk. 10.00 whereas Net Assets of the Fund stood at Tk. 934,625,271.00.

- ২০০৫ এ যাত্রা শুরু করে এই কম্পানির বর্তমান নিট মূল্য ২৭'৮০ টাকা (অর্থাত ইউনিট প্রতি আয় ১০'৮০ টাকা)। আর এই ২৭'৮০ টাকায় কেনা শেয়ার সমূহের বর্তমান বাজার মূল্য ৫৪'৯৮ টাকা। মানে তাদের পোর্টফলিও লাভে পরিচালিত হচ্ছে এবং এর পরিমান ৯৭'৫% (বেজ ২৭'৮০)।

বর্তমানে GRAMEEN1 এর বাজার মূল ৯০ টাকা (যদিও একটু বেশি, আমার মতে সর্বোচ্চ ৭০ হওয়া উচিত। তবে আমাদের বাজারের নেচার অনুযায়ী ৮০-৮৫ )। এখন যারা মনে করছেন GRAMEEN1 এর ১০ টাকা ফেস ভ্যালুর ইউনিট যদি ৯০ টাকা হয় তবে DBH1STMF এর ১০ টাকা ফেস ভ্যালুর ইউনিট ত ৩০-৪০ টাকা হবে :) । এখন উপরের ব্যাখ্যাগুল বোঝার পর আপনিই বলুন ঐরকম ঘটনা ঘটার কি আদৌ কোন গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা আছে ? হুজুগ আর মার্কেট ম্যানুপুলেশন হয়ত ক্ষনিকের জন্য এই অসম্ভবকে সম্ভব করবে (আমাদের বাজারে প্রায়ই করে :( ) কিন্তু তা কতদিন স্থায়ী হবে?

মনে রাখা উচিত মার্কেট ম্যানুপুলেশন হয়ত ক্ষনিকের জন্য কোন শেয়ারের দাম আকাশে বা পাতালে নামিয়ে দিতে পারে কিন্তু অবশ্যই তা ক্ষনস্থায়ী সময়ের জন্য। তাই ভাল মৌল ভিত্তির শেয়ার কিনুন লাভ বেশি না হলেও ক্ষতির শিকার হবেন না।




 

Comments

  1. ধন্যবাদ অত্যন্ত গুরুত্ববহ তথ্য দেয়ার জন্য, আগামি তে এরকম আরও ভাল লেখা পাবার আশা করি। ভাল হয় যদি টেকনিক্যাল এনালাইসিস নিয়ে কিছু লিখেন।

    ReplyDelete
  2. বাজারে তো অনেক বিনিয়োগকারী থাকে, সো আমি তাদের কাছ থেকে কিভাবে শেয়ার কিনব আর বুঝবো?

    ReplyDelete
  3. শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পড়ে ভালো লাগলো। আমি সম্প্রতি একটি ব্লগ সাইট পড়েছি শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে বাংলাতে যদি আপনাদের ইচ্ছা হয় আপনারা এখানে গিয়ে পড়তে পারেন শেয়ার মার্কেট কি? কিভাবে শেয়ার মার্কেটে টাকা লাগাতে হয়।

    ReplyDelete
  4. খুব ভালো লাগলো

    ReplyDelete

Post a Comment